আশা (অণুগল্প)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৫:৪৯:২৫ বিকাল
ফজরের আজান হয়ে গেছে। এখনো জুলেখা বিছানা থেকে উঠতে পারেনি। রমিজ রিক্সা নিয়ে বের হবার সময় দেখতে পেলো। ভাবল, হয়তো একটু বেশী আরামে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হচ্ছে। গত রাতে বৃষ্টিও ঝরেছে অঝোর ধারায়। তাই ওকে না ডেকে নিজের রিক্সাটা নিয়ে চলে গেলো সে।
আরো আধাঘন্টা পরে জুলেখার মেয়ে শিউলি মাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে। মায়ের শরীরে হাত দিয়ে দেখে প্রচন্ড গরম। বলে, ' মা, তোমার তো অনেক জ্বর। আইজ কামে যাবা কীভাবে?' জুলেখা পাশ ফিরে মেয়েকে দেখে। প্রবল যন্ত্রণায় মাথা ছিড়ে যাচ্ছে, তারপরও মেয়ের মুখটি দেখতেই কেমন যেন শ্রান্তির পরশ বয়ে যায় দেহমনে। একটু হাসে। আর মেয়ের মাথায় একটু হাত বুলিয়ে আদর করে।
এইটুকুন ভালোবাসায় মেয়ের কচি হৃদয়ে তোলপাড় হয়। সে মাকে বলে, ' আইজ আমি কামে যাই মা? তুমি বাসায় থাকো।' মুহুর্তে জুলেখা জ্বলে উঠে বলে, ' তোর স্কুল আছে না? খবরদার আর কোনো দিন এই কথা বলবি না।'
মেয়ে কিছুটা বিষন্ন হয়। নিজের একটা বই নিয়ে মায়ের থেকে অনতিদূরে কাঠের পড়ার টেবিলে পড়তে বসে। বিছানায় শুয়ে থেকেই জুলেখা বই এর দুর্বোধ্য অক্ষরগুলো আবছা ভাবে দেখে। অক্ষরগুলো যদিও অস্পষ্ট কিন্তু ওর মেয়ের ভবিষ্যৎ সেখানে স্পষ্ট হয়ে ওর চোখে দেখা দেয়।
প্রচন্ড কষ্টকর মুহুর্তকে উপেক্ষা করে জুলেখা উঠে বসে। আজ কাজে না গেলে বাসার মালকিনের ঝাঁঝালো কথার উত্তাপে সে আরো জর্জরিত হবে। তার তুলনায় এখনকার শারীরিক যন্ত্রনাকে জুলেখার কিছুই মনে হয় না।
মৃদুমন্দ বাতাসে একজন জুলেখা কাঁপতে থাকে।
আশায় বুক বাঁধা একজন মা।
বিষয়: সাহিত্য
৮৩৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনুভূতি রেখে যাওয়ার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
শুভেচ্ছা রইলো অনেক অনেক।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ সাথে থেকে অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার পোষ্ট থেকেই বলি!
আশা সব সময় রয়ে যায়!!
আপনার সুচিন্তিত মতামত অনেক ভালো লাগল।
শুভেচ্ছা রইলো।
ব্লগে অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ভালো লেগেছে!
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন